Sunday, October 28, 2012

গেস্ট ব্লগিং কি? কেন? কিভাবে?

গেস্ট ব্লগিং হচ্ছে ইদানিং সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি এসইও পদ্ধতি. এটা নিয়ে একটু সংক্ষেপে জানার চেষ্টা করি.

গেস্ট ব্লগিং কি :- গেস্ট ব্লগিং হচ্ছে একটি ব্লগার এবং অন্য লেখক মধ্যে পারস্পরিক উপকার বিনিময় এর একটা মাধ্যম যেখানে উভয় পক্ষের সুবিধা রয়েছে. এখানে লেখক একটি আর্টিকেল লিখেন এবং ব্লগার কে দেখান. ব্লগার সেটি দেখেন এবং যদি মনে করেন যে আর্টিকেলটা তার সাইট এর উপযুক্ত তাহলে তিনি তা পাবলিশ করবেন. বিনিময়ে লেখক তার লিংক বিল্ড করার সুযোগ পাবেন. এভাবে তিনি একটি সাইট হতে নিজের সাইট এর জন্য লিংক বিল্ড করতে পারবেন. আর ব্লগার তার সাইট এর জন্য সহজে ভালো এবং ইউনিক কন্টেন্ট পেয়ে যাবেন. সংক্ষেপে এটাই গেস্ট ব্লগিং.







গেস্ট ব্লগিং এর সুবিধা:- গেস্ট ব্লগিং এর অনেক সুবিধা রয়েছে যেমন :- নির্দিষ্ট শ্রোতা তৈরী করা, সুনাম প্রতিষ্ঠা করা, লিংক বিল্ডিং, নেটওয়ার্কিং ইত্যাদি. নিম্নে কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হলো.

১. নির্দিষ্ট শ্রোতা তৈরী করা - নির্দিষ্ট টপিকস এর নিচে গেস্ট ব্লগিং এর মাধ্যমে আপনি নির্দিষ্ট শ্রোতা তৈরী করতে পারবেন. কেননা যারা আপনার টপিকস এর রিডার তারা ওই বিষয়ে আগ্রহ রাখে এবং তাদের কে আপনার লিখা দ্বারা আকৃষ্ট করতে পারলে তারা আপনার ফ্যান, ফলওয়ার হয়ে যাবে. যার ফলে আপনার রিডার আপনার লিখাকে তাদের ফ্যান, ফলওয়ারদের নিকট প্রচার করবে যদি তা মানসম্মত্ত হয়.

২. সুনাম প্রতিষ্ঠা করা - প্রত্যেকবার বিভিন্ন ব্লগ এ নির্দিষ্ট টপিকস এর পোস্ট করলে অনেক মানুষ আপনার লিখা পড়তে পারবে যার ফলে আপনার লিখা সম্পর্কে তারা পরিচিত হবে. যদি মানসম্মত্ত এবং তথ্যবহুল হয় তাহলে তারা সর্বদা আপনার লিখা পরবে এবং খুজবে যার ফলে ওই নির্দিষ্ট টপিকস এ একজন এক্সপার্ট হিসাবে নিজের সুনাম প্রতিষ্ঠা করা হয়ে যাবে.

৩. লিংক বিল্ডিং - লিংক বিল্ডিং এর ক্ষেত্রে গেস্ট ব্লগিং একটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম. নিজের লিখা প্রকাশের মাধ্যমে নিজের সাইট এর জন্য আপনি লিংক বিল্ড করতে পারবেন. যার ফলে সার্চ ইঞ্জিনে আপনার অবস্থান ভালো হবে. আপনার যদি লিংক এর ভ্যালু সম্পর্কে ধারণা থাকে আপনি সহজেই বুঝবেন একটি ভালো সাইট হতে লিংক বিল্ড করার মুল্য কতটা. আর বর্তমানে সার্চ ইঞ্জিন ডুপ্লিকেট কন্টেন্ট এর সাইট কে শাস্তি দিচ্ছে তাই সেই ক্ষেত্রে গেস্ট ব্লগিং আপনার সাইট এর সুনাম রক্ষা করতে সাহায্য করবে.

কিন্তু আপনাকে এটা সর্বদা মনে রাখতে হবে যে গেস্ট ব্লগিং কে শুধু লিংক বিল্ডিং এর মাধ্যম হিসাবে নিলে ভুল করবেন. উপরে আমি যেই কয় একটা বিষয় এর কথা বলেছি এগুলো সবই গুরত্বপূর্ণ. যদি আপনি শুধুমাত্র লিংক বিল্ড এর কথা ভাবেন তাহলে আপনার আর্টিকেল কখনই মানসম্মত্ত হবেনা. আর মানসম্মত্ত নাহলে আপনার আর্টিকেল ব্লগার কখনই তা গ্রহণ করবেনা. বিশেষ করে যখন তারা বুঝবে যে আপনার টার্গেট শুধু লিংক বিল্ড করা. হয়ত কিছু নিচু মানের ব্লগ এ আপনি আপনার লিখা পাবলিস করতেও পারেবন কিন্তু সেটার তেমন মুল্য থাকবেনা বরং কোনো ক্ষেত্রে তা আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে.

সংক্ষেপে গেস্ট ব্লগিং এর সুবিধা গুলো:-
  • সাইট এর জন্য ট্রাফিক বৃদ্ধি করা.
  • নির্দিষ্ট রিডার বা কাস্টমার টার্গেট করা.
  • নিজের সাইট এর জন্য শক্তিশালী লিংক বিল্ড করা.
  • নিজের ব্র্যান্ড তৈরী করা.
  • বিভিন্ন ব্লগারদের সাথে যোগাযোগ তৈরী করা.
  • অন্য ব্লগারদের থেকে টিপস জানা.
  • নিজের অভিজ্ঞতা অন্যদের সাথে শেয়ার করা.
  • নিজের রাইটিং দক্ষতা বাড়িয়ে তোলা ইত্যাদি.

আবারও বলছি মনে রাখবেন গেস্ট ব্লগিং শুধুমাত্র লিংক বিল্ডিং নয়.

গেস্ট ব্লগিং এবং আর্টিকেল মার্কেটিং এক নয় :- মনে রাখবেন গেস্ট ব্লগিং এবং আর্টিকেল মার্কেটিং এক নয়. গেস্ট ব্লগিং এর জন্য আপনার ইউনিক আর্টিকেল লাগবে যেটা আর্টিকেল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রেও লাগে কিন্তু মাঝে মাঝে স্পিন কন্টেন্ট দিয়েও কাজ করা যায় যেটা গেস্ট ব্লগিং এ সম্ভভ নয়. এছাড়া আর্টিকেল মার্কেটিং শু্ধুমাত্র আপনাকে লিংক ছাড়া তেমন কিছু দিবেনা কিন্তু গেস্ট ব্লগিং আপনাকে লিংক ছাড়া নিজের ব্র্যান্ড তৈরিতে, সুনাম প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে, নেটওয়ার্কিং এর ক্ষেত্রে সাহায্য করবে. তাই ২ টাকে এক জিনিস  ভাবার কারণ নাই.

কিভাবে গেস্ট ব্লগিং এর সহজে খুঁজে পাবেন :-

১. গেস্ট ব্লগিং এর সমার্থক শব্দ বেবহার করুন. নিচে কয়েকটা উদাহরণ দেয়া হলো:-
  • “Submit a guest post”
  • ”submit post”
  • ‘’Submit blog post’’
  • ”Add blog post”
  • ”Submit an article”
  • ”Suggest a guest post”
আপনি দেখছেন সবগুলা কোটেসন মার্ক দিয়ে লিখা হয়েছে যার ফলে গুগল আমাদের কে সঠিক রেজাল্ট টা দিবে. নিচের ছবিটা খেয়াল করুন:-





২. ওয়াইল্ড কার্ড অপারেটর(*) বেবহার করে গেস্ট ব্লগিং এর সাইট খুঁজে বের করা যায়. কোটেসন মার্ক বেবহার করলে রেজাল্ট ফিল্টার করে বের করা যায়. কিন্তু এর ফলে অনেক সুযোগ হাতছাড়া হয়. অন্য অনেক রেজাল্ট এড়ানো হয় যা কিনা আমাদের কাজে লাগত. তাই সেই ক্ষেত্রে ওয়াইল্ড কার্ড অপারেটর(*) এই মার্ক বেবহার করা যায়. নিচের ছবিটি লক্ষ্য করুন –






এছাড়াও আরো কিছু নিয়ম আছে যা গুগল এ খুজলেই পেয়ে যাবেন. তাছাড়া সবচে ভালো হয় নিজের পরিচিত নেটওয়ার্ক এ কাজ শুরু করলে. যেমন আপনার বন্ধুর আপনার সাইট রিলেটেড ব্লগ আছে. আপনি তার সাথে যোগাযোগ করে গেস্ট পোস্ট করতে পারেন.

এছাড়া My Blog Guest  একটি ফ্রি ব্লগ্গিং কমিউনিটি যারা গেস্ট পোস্টিং এর সুযোগ গুলা তৈরী করে দেয় এবং একজনের সাথে আরেকজনের যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে কাজ করে.

কিভাবে গেস্ট পোস্টিং এর সাইট নির্বাচন করবেন:- নিজের বিচার বিবেচনা কাজে লাগান. কোনো সাইট এ পোস্ট করার আগে সাইট টা নিয়ে একটূ যাচাই করুন. দেখুন সার্চ ইঞ্জিনে সাইট এর ভ্যালু কেমন. সাইট টা কতটা জনপ্রিয়, সাইট এ কতগুলা পোস্ট আছে, কারা কারা  গেস্ট পোস্টিং করছেন, যারা করছেন তাদের নাম সংগ্রহ করে খোজ করুন তারা কেমন লেখক, সাইট এ পোস্ট গুলার পরে কয়টা কমেন্ট আছে, সম্প্রতি কয়টা পোস্ট আছে কমেন্ট কয়টা, সাইট টির সোশাল মিডিয়া কেমন এইসব কিছু জিনিস দেখলেই বুঝতে পারবেন এই সাইট আপনার জন্য কতটা কার্যকরী.

আর্টিকেল এর বিষয়ে কিছু কথা:- গেস্ট পোস্ট এর জন্য আর্টিকেল টা কেমন হলে ভালো হয় এটা আপনাকে আগে জানতে হবে. প্রথমেই নিজের টপিকস নির্বাচন করুন. যা লিখবেন তা নিয়ে অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে. না জেনে কিছু লিখবেন না. আর্টিকেল অবশ্যই ইউনিক হতে হবে. যেখানে পোস্ট করবেন ওই সাইট এর আর্টিকেল এর ফরমেট তা দেখে নিন সেই হিসাবে নিজের আর্টিকেল ফরমেট করুন. যেমন তারা কত শব্দের আর্টিকেল প্রকাশ করে জেনে নিয়ে সেই হিসাবে লিখুন. নিজের টপিকস এর সাথে রিলেটেড আর্টিকেল লিখবেন. তথ্যবহুল আর্টিকেল লিখুন যাতে রিডার পরে কিছু জানতে পারে. সহজ সুন্দর ভাষাতে লিখুন. ছবি বেবহার করুন তাতে রিডারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা সহজ হয়. আপনার আর্টিকেল এর মাঝেই ছবি দিয়ে ব্লগার কে দিবেন না. আর্টিকেল আর ছবি আলাদা করে দিন তাতে ব্লগার নিজের ব্লগ এ তা সুন্দর করে রাখতে পারবে. বার বার পড়ুন আর পরার সময় নিজেকে অন্যর লিখা পড়ছেন মনে করুন. দেখুন আপনি সন্তুষ্ট হচ্ছেন কিনা. এটাই আসল বিষয়. নিজে লিখে সন্তুষ্ট না হলে অন্য কেউ তা পরে সন্তুষ্ট হবেনা. লিখার সাথে সাথে তা ব্লগার কে দিবেন না. লিখা হয়ে গেলে বিরতি নিন সময় গেলে আপনার ফ্রেশ লাগবে এবং আবার একবার পড়ুন দেখুন ভুল বের হয় কিনা. তারপর প্রদান করুন.

লেখক পরিচিতি:- নিজের লেখক পরিচিতি তৈরী করেন. অযথা দীর্ঘ করবেন না. সংক্ষেপে যতটা বলা দরকার বলুন অদরকারী কথা লিখবেন না. নিজের সম্পর্কে সংক্ষেপে যতটা পারা যায় তথ্য দিয়ে দিন. অধিকাংস ক্ষেত্রে লেখক পরিচিতে আপনি আপনার সাইট এর লিংক দিবেন. শুরু করুন নিজের নাম দিয়ে. তারপর এককথায় নিজের একটা পরিচয় তুলে ধরুন. আপনি কোন বিষয়ে দক্ষ তা তুলে ধরুন দরকার হলে আপনার সোশাল মিডিয়া লিংক দিতে পারেন. নিচে একটি উদাহরণ দেয়া হলো:-


এইখানে আমি ৩ টা লিংক বেবহার করেছি. এটাই উত্তম. আপনি আপনার দরকার মত বেবহার করবেন।
পরিশেসে আমি বলব গেস্ট পোস্ট নিয়ে ওইভাবে টিউটরিয়াল হয়না। আপনি আরটিকেল লিখবেন আর যেখানে প্রকাশ করতে চান সেই সাইট এর ওয়েবমাস্টার এর সাথে যোগাযোগ করে তা করার বেবস্থা করবেন।
অনেক ভুল থাকতে পারে আশা করি ক্ষমাসুন্দর ভাবে দেখবেন।








0 comments:

Post a Comment

Total Pageviews

Powered by Blogger.

© iটিউটোরিয়ালবিডি, AllRightsReserved.

Designed by AllForBlogspot